বৃহস্পতিবার

২৮ মার্চ ২০২৪


১৪ চৈত্র ১৪৩০,

১৮ রমজান ১৪৪৫

‘মিলিটারি ডিকটেটররা মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র-অর্থ-মাদক তুলে দিয়েছিল’

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ২৬ জুন ২০২২   আপডেট: ১৩:৩৮, ২৬ জুন ২০২২
‘মিলিটারি ডিকটেটররা মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র-অর্থ-মাদক তুলে দিয়েছিল’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি, সংগৃহীত

ঢাকা (২৬ জুন): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর মার্শাল ল' দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হতো। ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে মিলিটারি ডিকটেটররা মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র-অর্থ-মাদক তুলে দিয়ে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করেছিল।

শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে এ সময় তিনি বলেন, আমি একটি কথা বলব, আমাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অনেক মেধা আছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তির যুগে জন্মগ্রহণ করছে। তাদের সেই সুপ্ত মেধাগুলো অন্বেষণ করতে হবে এবং সেটা আমাদের আগামী দিনের বাংলাদেশকে উন্নত করার কাজে ব্যবহার করতে হবে।

আজ রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২২’এর জাতীয় পর্যায়ে ১৫ জন সেরা মেধাবীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিজয়ী জাতি, বিশ্বের মধ্যে মাথা উঁচু করে চলব। এ দেশ আমাদের। আমরা এ দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলব।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’। আসলেই পারে নাই। পদ্মা সেতুতে যখন অর্থায়ন বন্ধ করে দিল, আমরা তখনই ঘোষণা দিয়েছিলাম, নিজের অর্থে করব। করে দেখিয়ে দিয়েছি আমরাই পারি।

শিক্ষানীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাফল্য অর্জন করতে হলে নীতিমালা বা লক্ষ্য থাকা প্রয়োজন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করলে সাফল্য পাওয়া যায়। আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে সেটাই করেছি।

তিনি বলেন, ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন বঙ্গবন্ধু। সেই কমিশন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন। সেটা জাতির পিতার হাতেও দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যার পর সেই কমিশনের রিপোর্ট আর কখনো আলোর মুখ দেখেনি। তার ভিত্তিতে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, কারণ তখন মার্শাল ল' জারি করা হয় এবং মার্শাল ল' দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হতো। 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এটাই হলো সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়। শিক্ষার পরিবেশটা নষ্ট করে। মিলিটারি ডিকটেটররা আমাদের যারা মেধাবী ছাত্র তাদের হাতে অস্ত্র-অর্থ তুলে দিয়ে, মাদক তুলে দিয়ে তাদেরকে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করে। যাদের মাধ্যমে তারা ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করে। কাজে শিক্ষার যে পরিবেশটা, সেই পরিবেশটাই নষ্ট করে দেয়। তার জন্য বছরের পর বছর সেশন জট হয়, আমাদের ছেলে-মেয়েরা তাদের শিক্ষার সুযোগ অনেকটা সীমিত হয়ে পড়ে।

সরকারপ্রধান বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। সরকার গঠন করার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, সমস্ত ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা। গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে আসা, শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করা। আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেই। পাশাপাশি গবেষণার ওপর আমি গুরুত্ব দেই। যেটা আমি লক্ষ্য করেছিলাম, গবেষণার জন্য বাজেটে আলাদা কোনো অর্থ দেওয়া হতো না। গবেষণার উৎসাহ দেওয়া হতো না। শুধু নিয়ম মাফিক যেটুকু গবেষণা শুধু সেটুকুই হতো। ৯৬ সালে যখন আমি সরকার গঠন করি, প্রথম পর্যায়ে আমি ১২ কোটি টাকা দিয়েছিলাম গবেষণায়।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে তখন খাদ্যের জন্য আমরা যে পরনির্ভরশীল ছিলাম, ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল, সেখানে আমি কৃষি গবেষণাকে গুরুত্ব দেই। যাতে করে আমাদের দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে।

শিক্ষা নীতিমালার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একটি নীতিমালা বা স্থির লক্ষ্য ছাড়া কখনো উন্নতি করা যায় না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মনে রাখতে হবে আমাদের দেশটা এখানেই থেমে থাকবে না। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বাল্পোন্নত দেশে উন্নীত করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর আমাদের জীবনে অনেক ঝড়-ঝাপ্টা গেছে, প্রায় ২১ বছর কোনো অগ্রগতি সাধিত হয়নি।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব বক্তব্য রাখেন। এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Nagad
Walton

সর্বশেষ