বৃহস্পতিবার

২৫ এপ্রিল ২০২৪


১২ বৈশাখ ১৪৩১,

১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ২২ মে ২০২২   আপডেট: ১৬:৪৫, ২২ মে ২০২২
হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা ( ২২ মে): দুর্নীতির মামলায় ১০ বছর দণ্ডিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

এর আগে, আজ দুপুর দুইটার দিকে হাজী সেলিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তিনি যেকোনো শর্তে জামিনের আবেদন করেন। এ ছাড়া, কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়েও দুটি পৃথক আবেদন করা হয়। তবে, তার জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাজী সেলিমের আইনজীবী প্রাণ নাথ জানান, আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালে ওপেন হার্ট সার্জারির সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাকশক্তিহীন অবস্থায় রয়েছেন হাজী সেলিম। তিনি দেশ ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলহাজতে থাকলে চিকিৎসার অভাবে ও বাকশক্তিহীনের কারণে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ কারণে যেকোনো শর্তে তার জামিন আবেদন করছি।

আবেদনে আরও বলা হয়, জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না। তাই আপিল শর্তে আত্মসমর্পণ-পূর্বক তার জামিন আবেদন করছি।

গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে হাইকোর্ট থেকে মামলার নথি এসে পৌঁছায়। এদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে রায়ের নথি পাঠানো হয়। সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, আইন অনুযায়ী আজ থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।  

এর আগে, হাজী সেলিমকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার রায় দেন হাইকোর্ট। ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ পায় রায়।

এ ছাড়া, জরিমানার টাকা অনাদায়ে হাজী সেলিমকে আদালত আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন এবং রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। 

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এরপর ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেন। 

তবে, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের ওই রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায় দেন হাইকোর্ট। সেখানে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের কারাদণ্ড কমিয়ে ১০ বছর বহাল থাকে।

হাজী মোহাম্মদ সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য। এই মামলায় ১৩ বছর আগে বিচারিক আদালতের রায়ের পর তাকে মাসখানেক কারাগারে থাকতে হয়েছিল। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিনে বের হন তিনি। মাঝের এই সময়ে তিনি দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়