চুকনগর গণহত্যা দিবস আজ
খুলনা ব্যুরো || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
খুলনা (২০ মে): খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে ১৯৭১ সালের ২০ মে পাকিস্তানি বাহিনী যে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল, সংখ্যার ভিত্তিতে তা ছিল দেশের সর্ব বৃহৎ।
সে-দিন ঠিক কতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তা আজও নির্দিষ্ট সংখ্যায় নির্ধারিত করা যায়নি। কারণ, নিহতদের অধিকাংশকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনা হয়েছিল, অর্থাৎ তাঁরা ছিলেন অস্থানীয়। তবে, এই সংখ্যা কোনোক্রমে ১০ হাজারের কম নয় এ বিষয়ে গবেষণা করা গবেষক, ইতিহাসবিদ ও স্থানীয়দের সুস্পষ্ট মত।
খুলনার চুকনগর শহরটি ভারতীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত হওয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে খুলনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ও বাগেরহাট জেলা থেকে প্রচুর মানুষ ভদ্রা নদী পার হয়ে চুকনগরে পালিয়ে আশ্রয় নেন। ২০ মে সকাল ১০টার দিকে তিনটি ট্রাকে করে পাকিস্তানি সেনারা চুকনগর বাজারের ঝাউতলায় (তৎকালীন পাতখোলা) এসে থামে। বর্বর হানাদারদের সঙ্গে ছিল মেশিন গান ও সেমি-অটোমেটিক রাইফেল। দুপুর তিনটা পর্যন্ত তারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করতে থাকে।
হত্যাযজ্ঞ থেকে বাঁচার আশায় অনেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। তাঁদের অনেকেই ডুবে মারা যান। লাশের গন্ধে ভারী হয়ে যায় চুকনগর ও এর আশপাশের বাতাস। মাঠে, ক্ষেতে, খালে-বিলে পড়ে থাকে লাশ আর লাশ। এসব স্থান থেকে লাশ নিয়ে নদীতে ফেলার কাজ শুরু করেন স্থানীয়রা।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার সেনারা যে বর্বর অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার এক ভয়াবহ সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছে আজকের চুকনগর। ১৯৭১ সালের ২০ মে চুকনগরে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে নিহত নিরস্ত্র মানুষদের স্মৃতির উদ্দেশে চুকনগরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভটির নাম চুকনগর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। চুকনগরের ফসলী জমিগুলোয় আজও পাওয়া যায় সেদিনের নিহতদের হাড়গোড় ও তাঁদের শরীরে থাকা বিভিন্ন অলঙ্কার।