বৃহস্পতিবার

২৫ এপ্রিল ২০২৪


১২ বৈশাখ ১৪৩১,

১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে পরীমনির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৯:১১, ১৪ জুন ২০২১   আপডেট: ২২:১৫, ১৪ জুন ২০২১
নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে পরীমনির মামলা

ছবি সংগৃহীত: সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি

ঢাকা (জুন ১৪): ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। বাকি চার আসামি অজ্ঞাতনামা।

আজ সোমবার সকালে পরীমনি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

পরীমনির সাভার থানায় মামলার দায়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তাঁর বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।’

রবিবার (১৩ জুন) রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিচারের দাবি চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন পরীমনি। অভিযোগ করেন, তাকে এক প্রভাবশালী ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করেছিল চারদিন আগে, ঢাকা বোট ক্লাবে।

এমন বিস্ফোরক অভিযোগের ঠিক দুই ঘণ্টার মাথায় নিজ বাসায় বসে সাংবাদিকদের কাছে সেই অভিযুক্তর নাম প্রকাশ করেন পরী। নাম নাসির ইউ মাহমুদ। যিনি উত্তরা ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে ঢাকা বোট ক্লাবের এন্টারটেইনমেন্ট এন্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি পদে আছেন।

রবিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি জানান, বুধবার (৯ জুন) রাতে পূর্বপরিচিত অমির সঙ্গে উত্তরার বোট ক্লাবে যান তিনি। সেখানে গিয়ে দেখেন নাসির ইউ মাহমুদসহ চার-পাঁচজন টেবিলে বসে আছেন। তাদের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। বোট ক্লাবে সেদিন টেবিলে মদের বোতল ছিল। পরীকে নাসির ইউ মাহমুদ মদপানের প্রস্তাব দিলে সেটি নাকচ করেন তিনি। এরপর তাকে কফি খেতে দেওয়া হয়।

পরী বলেন, কফির কাপে তিনি আনন্দ নিয়ে চুমুক দিলেও স্বাদ খানিক অস্বাভাবিক মনে হয় তার। তাই তিনি কফি পান আর করেননি। এমনকি টেবিলে থাকা ঠাণ্ডা পানীয়তেও তিনি মুখ দেননি। বিপরীতে বার বার এগুলো পান করার জন্য তাগিদ দিচ্ছিলেন নাসির ইউ মাহমুদ। সেটি না শোনায় পরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন নাসির ইউ মাহমুদ।

এরপর পরীমনি টেবিল থেকে উঠে ওয়াশরুমে যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। এরপর বাসায় যেতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়।

পরীর অভিযোগ, নাসির ইউ মাহমুদ তাকে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেন এবং মুখের ভেতর জোর করে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন। এতে তার দাঁতে আঘাত লাগে এবং কিছু মদ গলায় যায়। এতে তার গলা ও বুক জ্বলে। তিনি তখনই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীমনি তখন চিৎকার ও কান্না শুরু করলে তাদের ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়।

কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন পরীমনি

একটা সময় তারা সেখান থেকে ছাড়া পেলে সঙ্গে সঙ্গে বনানী থানায় লিখিত অভিযোগ জানান পরী। তার অভিযোগ, থানা তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি।

এদিকে পরীমনির এসব অভিযোগের বিষয়ে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদকে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, তারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনার রাতে থানায় পরীমনির আচরণ অসংলগ্ন হওয়ায় পুলিশের একটি দল তাকে সেখান থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। পরের দিন তিনি আর থানায় যাননি। এমনকি থানার ওসি বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারও সঙ্গে কথা বলেননি।

এদিকে পরীমনি নিজ বাসায় পুরো ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে বার বার বলেন, ‘আমি যদি মরে যাই সেটা হত্যা হবে, আত্মহত্যা নয়। কারণ, আমি আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নই। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই। এর বিচার দেখে মরতে চাই। আর যদি আমাকে কেউ হত্যা করে, তখন আপনাদের কাছে সেই বিচারের ভার দিয়ে গেলাম। আবারও বলছি, আজ যদি আমি মরে যাই, তো সেটি আত্মহত্যা হবে না। ধরে নেবেন আমাকে হত্যা করা হয়েছে।’

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়