শিক্ষার্থীদের মানতে হচ্ছে বেশ কিছু নির্দেশনা
দেড় বছর পর খুলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (০৫ অক্টোবর ): করোনা মহামারি কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর খুলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো। আজ মঙ্গলবার থেকে শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো খুলে দেওয়া হল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে গত বছরের ২০ মার্চে বন্ধ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল।
সকাল ৮টা থেকে হলগুলো খোলাতে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিচ্ছেন হলের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা এক ডোজ টিকা নেওয়ার সনদ দেখিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে হলে উঠতে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় ফুল ও চকলেট দিয়ে হল প্রশাসনও তাদের স্বাগত জানাচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হলে প্রবেশ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা নিজেদের হলগুলোতে ফেরায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের যেসব শর্ত মানতে হচ্ছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীÑ অনার্স ৪র্থ বর্ষ এবং মাস্টার্স-এর যেসব আবাসিক ছাত্র-ছাত্রী অন্তত করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে, তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে টিকা গ্রহণের কার্ড বা সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবেন। তবে তাদের জন্য বেশ কিছু শর্ত বা নির্দেশনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
হল ব্যবহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনাসমূহ:
এক, কক্ষের বাইরে আসলে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক সঠিক নিয়মে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
দুই, স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিন, স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
চার, কোনো কক্ষের মেঝেতে শোয়া যাবে না, এক বিছানায় একাধিক ব্যক্তি শোয়া যাবে না। কেবলমাত্র আবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবে। কোনো বহিরাগত বা বাহির থেকে আসা কাউকে কক্ষে অবস্থান করতে দেয়া যাবে না।
পাঁচ, প্রয়োজন সাপেক্ষে কক্ষে এবং কক্ষের বাহিরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
ছয়, শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কক্ষ এবং কক্ষের প্রয়োজনীয় আশপাশে সবসময় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিজ্ঞা রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে হল প্রশাসন সহযোগিতা করবে।
সাত, হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, রিডিংরুম, অডিটোরিয়াম, টিভিরুম, অতিথিকক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপাসনালয়ে ভিড় করা যাবে না। শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি অনুসরণ এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ডাইনিং-এ পালাক্রমে খাবার খেতে হবে।
আট, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অতিথিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। বেড়াতে ও ঘুরতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সভা-সমাবেশ, রেস্তোরাঁ, পার্টি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে।
ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ার জন্য নির্দেশনাসমূহ:
এক, নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক নিয়মমাফিক নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
দুই, ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ায় একাধিক ফটক থাকলে সেগুলোর মধ্যে একটি প্রবেশের জন্য এবং অন্যটি বহির্গমনের জন্য ব্যবহার করতে হবে।
তিন, প্রবেশ-বহির্গমন পথে ভিড় এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।
চার, স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাতধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
পাঁচ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
ছয়, ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়ায় পালাক্রমে খাবার খেতে হবে। তবে বোতলজাত পানীয় এবং ডিসপোজেবল পাত্রে খাবার সংগ্রহ করে রুমে বসে খাওয়া নিরাপদ।
সাত, একই সময়ে কর্মীদের সংখ্যা সীমিত রাখতে ১০-১৫ মিনিটের ব্যবধানসহ শিফট পরিচালনা করতে হবে।
আট, স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ব্যবহৃত ছুরি-চামচ, খাবারের পাত্র, কাপ ইত্যাদি পুনর্ব্যবহারের আগে ডিটারজেন্ট দিয়ে যথাযথভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
নয়, দরজা ও জানালা খোলা রেখে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
দশ, প্রত্যেকবার ব্যবহারের আগে খাবারের টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বক্ষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
এগার, কোনো সমস্যা হলে ব্যাপারে দায়িত্বরত ম্যানেজার বা সুপারভাইজারকে জানাতে হবে।