শনিবার

২০ এপ্রিল ২০২৪


৭ বৈশাখ ১৪৩১,

১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সংবাদ সম্মেলন

ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ১৩২ কোটি টাকার হিসাব নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১৬ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ২২:৫৯, ১৬ অক্টোবর ২০২১
ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ১৩২ কোটি টাকার হিসাব নেই

শনিবার ডিআরইউতে অনুষ্ঠিত ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ

ঢাকা (১৬ অক্টোবর): ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির তিন বছরের কমিশন বাবদ আয়ের ১৩২ কোটি টাকার কোনো হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই অর্থ সমিতির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ বর্তমান কমিটির। 

শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতাউল করিম ও সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন সরকারসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সমবায় অধিদপ্তর থেকে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ২০১৮-২০২০ সময়কালের অডিট রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের  ৩০ জুন পর্যন্ত চুক্তি মোতাবেক পিপিআই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা হতে রাজস্ব আদায়ে ঠিকাদারি বিল বাবদ সমিতি ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকা অর্থাৎ, মোট ১৩৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৬৩ টাকা পেয়েছে। 

এ অর্থ থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে হিসাব বিবরণীতে মাত্র ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা হিসাবভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকার কোনো হিসাব নেই। 

২০১৬ সালে সমিতির সভাপতি ছিলেন হাফিজ উদ্দিন ও সম্পাদক আতাউর রহমান মিয়া এবং ২০১৯ সালে সভাপতি ছিলেন মো. আক্তারুজ্জামান ও সম্পাদক ছিলেন মো. জাকির হোসেন।  এই সময়ে দুই কমিটির পিপিআই পরিচালনা পর্ষদে হাফিজ উদ্দিন, মো.  আক্তারুজ্জামান ও মিঞা মো. মিজানুর রহমানসহ আরও বেশ কিছু সদস্য বিধিবহির্ভূত ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে খরচ ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ বর্তমান কমিটির।
 
কমিটি ও পরিচালনা পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত সময়ে সমিতি ও পিপিআই প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা হিসাব থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই প্রায় ৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। যার হিসাবও পাওয়া যায়নি বলে অডিট রিপোর্টে এসেছে তারা জানিয়েছে।

তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ শুধু নয়, বরং সমিতির সম্পদ ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষও দখল করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। তারা জানান, ঢাকা ওয়াসার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সমিতির আর্থিক ও সম্পত্তির পুরোটাই এখন ঢাকা ওয়াসার দখলে। ২০১৮-২০২০ সময়ের অডিট রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। সমিতির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বরাবর সমিতির বকেয়া পাওনা, সম্পদের মূল্য ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভাড়া পরিশোধের জন্য বার বার চিঠি ও মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। ঢাকা ওয়াসার কাছে বকেয়া পাওনা, সম্পদের মূল্য ও অন্যান্য বাবদ প্রায় ২০০ কোটি টাকা সমিতির পাওনা বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। 

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী এবং এ লক্ষ্যেই কাজ করছে। সমিতির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটিও ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী হিসেবে সংস্থার নীতির সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং সমিতির দুর্নীতির বিষয়েও ওই নীতিতে অটল। এমন অবস্থায় যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতি তথা জনগণের টাকা নয়-ছয় করার কাজে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হোক। আর নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা সমিতির অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনিয়মকারীদের চিহ্নিত করার জন্য সদা সচেষ্ট তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করার অপরাধে রুজু বিভাগীয় মামলা, কারণ দর্শানোসহ অন্যান্য নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হোক।
 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়