বৃহস্পতিবার

২৮ মার্চ ২০২৪


১৪ চৈত্র ১৪৩০,

১৮ রমজান ১৪৪৫

বাংলাদেশ সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যে শাকসবজি ও ফলমূল পাঠাতে পারবে: কৃষিমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
বাংলাদেশ সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যে শাকসবজি ও ফলমূল পাঠাতে পারবে: কৃষিমন্ত্রী

ছবি: ফাইল

ঢাকা,১ ফেব্রুয়ারি (ইউএনবি)- কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যে শাকসবজি ও ফলমূল পাঠাতে পারবে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে দুবাই বন্দরের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি দুবাই গিয়েছিলাম। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। আমরা তাতে সহায়তা করেছি। মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি আমরা শাকসবজি ফলমূল পাঠাতে পারব।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি)সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে কৃষিপণ্য ও আলু রপ্তানির অগ্রগতি বিষয়ক সভায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি দুবাই বন্দরের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়েছে। সিঙ্গাপুর না হয়ে সরাসরি যেতে পারলে সবজি নিয়ে চার-পাঁচদিনে আমাদের জাহাজ দুবাই যেতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতির কাছে আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলব। সত্যিকার অর্থে এখন মানুষ না-খেয়ে থাকে না। অন্তত দু’বেলা ভাত খেতে পারেন। আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছি।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য মানুষকে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য দেয়া। অর্থাৎ সার্বিকভাবে খাদ্যনিরাপত্তার বিভিন্ন দিকগুলোতে আমরা জোর দেব এবং সর্বাত্মকভাবে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে চাই।

কৃষিমন্ত্রী জানান, খাদ্যনিরাপত্তা বলতে আমরা বুঝি যে প্রয়োজনীয় দানাজাতীয় ও অন্য খাবারগুলো যাতে বাজারে পর্যাপ্ত থাকে, তা নিশ্চিত করা। অনেক সময় খাবার থাকলেও আয় থাকে না। কম আয়ের কারণে অনেক মানুষ না খেয়ে থাকেন। এমন হলে কোনো দেশ নিজেকে খাদ্য নিরাপদ বলে দাবি করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ‘কাজেই মানুষ যাতে মানসম্মত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন; যাতে সবাই প্রয়োজনীয় মেধা বিকাশ ও সক্রিয় থাকতে পারেন; সে জন্য পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

মন্ত্রী জানান, আমেরিকার মতো দেশেও দেখবেন, ক্রিসমাসের সময় বিনামূল্যে খাবার দেয়া হয়। শিকাগোতে ক্রিসমাসের আগে আমি দেখেছি। এ খাবার শুধু কালোরাই নেন না, শ্বেতাঙ্গরাও নেন।

তিনি বলেন, ‘ওই দেশে কম দামে খাবার কিনে খেতে স্ট্যাম্প দেয়া হয়। এরমধ্য দিয়ে বোঝা যায়, সেখানে পর্যাপ্ত খাবার থাকলেও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আমেরিকায়ও কমদামে ও ভর্তুকিতে মানুষকে খাবার দিতে হয়। কম আয়ের ও বেকারদের জন্য তারা এটা করেন।’

তিনি আরও বলেন, খাদ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের অনেকটা অর্জন হয়েছে চর ও হাওর এলাকায়। যে অঞ্চলকে আমরা কৃষিতে অনুন্নত বলতাম। সেই এলাকার মানুষও এখন দু’বেলা খেতে পারেন। এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো,পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সরবরাহ করা।

মন্ত্রী জানান, ‘সে কারণে তিনটি বিষয় সামনে রেখে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। কৃষিকে আমরা আধুনিকীকরণ করবো, যান্ত্রিকীকরণ করবো ও কৃষিকে লাভজনক করতে বাণিজ্যিকীকরণ করবো।’

তিনি বলেন, এজন্য স্থানীয় বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজার দুটোতেই জোর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে হলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যের মান বজায় রাখতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। যদিও করোনা মহামারির কারণে দুই থেকে আড়াই বছর আমরা অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারিনি।

তিনি বলেন, ‘কৃষিকে লাভজনক পেশায় নিয়ে যাওয়া সবসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল। কৃষি থেকে লাভ করা ও আয় করা ছিল আমাদের উদ্দেশ্য।’

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা সবসময় পর্যাপ্ত দাম পান না। সবজি-ডিম ও মাছের উৎপাদন বেশি হলেও কৃষকরা তা বিক্রি করতে পারেন না। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে লক্ষ্য বানাতে হবে। ২০২২-২৩ সালে আমরা দুই হাজার মিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম কৃষি থেকে। এখন পর্যন্ত আমরা এক দশমিক পাঁচ ডলারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য রপ্তানি করতে হলে মান বাড়াতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শ্যামপুরে আমাদের একটি প্যাকিং হাউস আছে। কিন্তু লোকেশন ভালো না। এটির আধুনিকায়ন চলছে। পূর্বাচলে আরেকটি প্যাকিং হাউস করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই একর জমি দিয়েছেন। সেখানে একটি ল্যাবরেটরিও হবে। এটির সার্বিক পরিকল্পনা শেষ। দ্রুতই এটি একনেকে যাবে। তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

আন্তর্জাতিক বাজারে কৃষি রপ্তানির পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্য কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আমাদের প্রতিযোগী পাকিস্তান, ভারত ও তুরস্ক। ভারত আলু রপ্তানি করে। এসব দেশের পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বন্দরগুলোতে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের জাহাজ সিঙ্গাপুর হয়ে যেতে হয়।

Nagad
Walton

সর্বশেষ