বুধবার

২৪ এপ্রিল ২০২৪


১১ বৈশাখ ১৪৩১,

১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলাদেশ ৫১ বছরে কখনোই দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৬:৪৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
বাংলাদেশ ৫১ বছরে কখনোই দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (২৭ সেপ্টেম্বর): অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের ৫১ বছরের যাত্রায় কখনোই দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে কম ঋণের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে ঋণের পরিমাণ মাত্র ৩৪ শতাংশ।

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় আজ মঙ্গলবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদরদপ্তরে বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির ক্রমবর্ধমান অর্থায়ন দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে মোট বকেয়া ১১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য সংকট পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে দ্রুত ভ্যাকসিন ও ব্যয় সহায়তা দিয়ে সাহায্য করেছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, বাংলাদেশ-এডিবি কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি (২০২১-২৫), বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন ও লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে আগামী পাঁচ বছরে আমাদের জন্য ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার জোগান থাকবে বলে আশা করা যায়। 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের উন্নয়নের মাইলফলক অর্জনে এডিবির ক্রমাগত সমর্থন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সব আর্থ-সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য, জ্বালানি, সার এবং আর্থিক সংকট বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করেছে এবং সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করতে আমাদের এডিবি থেকে বাজেট সহায়তার পাশাপাশি নীতিভিত্তিক ঋণ (পিবিএল) প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে আশা করি এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশেষ করে বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে অসহায় মানুষদের সাহায্যের জন্য গতিশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।

অর্থমন্ত্রী এ সময় এ বিষয়ে এডিবির সমর্থন কামনা করেন এবং বাংলাদেশও এডিবি সদরদপ্তরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্বলতা মোকাবিলায় মিশ্র অর্থায়নের পরিবর্তে নমনীয় ঋণসহায়তা হবে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি। এ ছাড়া এডিবি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে আইসিটি ভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন, কৃষি বৈচিত্র্যকরণ, স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং মানসম্পন্ন অবকাঠামোর কৃষি প্রবর্তনে তার উদার সহায়তা প্রসারিত করতে পারে।

এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও এডিবির সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ১৬৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি নাগরিকের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী এডিবি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফর এবং ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপনের আমন্ত্রণ জানান।

বৈঠকে এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সক্ষমতার প্রশংসা করে বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের সক্ষমতার একটি প্রতীক।

এ সময় এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের বিশেষ প্রশংসা করেন। এছাড়াও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ এবং টিকা কার্যক্রমেরও প্রশংসা করেন এডিবি প্রেসিডেন্ট।

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়