রোববার

১২ মে ২০২৪


২৯ বৈশাখ ১৪৩১,

০৪ জ্বিলকদ ১৪৪৫

লকডাউনে কাজ হারাচ্ছেন কৃষি-শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ০১:১৯, ৪ জুলাই ২০২১   আপডেট: ০১:২২, ৪ জুলাই ২০২১
লকডাউনে কাজ হারাচ্ছেন কৃষি-শ্রমিকরা

মোহাম্মদ আলীসহ পায়ে হেঁটে চলেছেন ক্লান্ত-শ্রান্ত এক দল কৃষি-শ্রমিক। । ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (০৩ জুন): মোহাম্মাদ আলী, পেশায় একজন কৃষক, বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। ধান কাটার কাজে গিয়েছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে। অর্থনীতির চাকা কিছুটা হলেও ঘোরাতে গিয়েছিলেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু ভাগ্য সেখানেও বাধ সেধেছে, মাত্র ৩ দিনের মাথায় ফিরতে হয়েছে তার অন্যান্য সঙ্গীদের নিয়ে।

বেলা গড়িয়ে তখন দুপুর ২টা। লকডাউনে ফাঁকা রাস্তায় খুব জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া দুই-এক জন মানুষ বাদে তেমন কাউকে চোখে পড়ে না। এমন সময় কাওরানবাজার মোড়ের রাস্তা পার হচ্ছিলেন এক দল মানুষ। তাদের পরনে ছেড়া জামা আর লুঙ্গি, কাঁধে ছিল কালো রঙের ভারী ব্যাগ। লোকগুলি এক ধেয়ানে শুধু হেঁটেই চলেছেন কোন দিকে তাকাবার সময়  নেই তাদের। তাদের চোখে মুখে রয়েছে হতাশা আর কপালে রয়েছে চিন্তার ভাঁজ।

হেঁটেচলা এই দলটির দলপতির নামই মোহাম্মাদ আলী। মোহাম্মাদ আলীসহ তার দলে আছে আরও সাতজন । এরা সবাই শ্রীনগর থেকে কাওরানবাজার প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে এসেছে। কিছু সময় আলীর সঙ্গে কথা হয়, আলী বলেন, “করোনায় কপাল পুড়েছে।” 

কারণ জানতে চাইলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আলী। অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, “১০ দিনের চুক্তিতে গিয়েছিলাম ধান কাটতে কিন্ত তিন দিন করেই লকডাউনের কারণে ফেরত আসতে হয়েছে।”

হাঁটতে হাঁটতে অনেক কথা হল, তিনি আরও জানান লকডাউনের কারণে রাস্তায় গাড়ি চলছে না সে কারণেই হেঁটেই এসেছেন ঢাকা। কিন্তু গ্রামের বাড়ি ময়নসিংহ কীভাবে যাবেন তা এখনো অনিশ্চিত।

আলীর সঙ্গে থাকা অন্যান্যদের কণ্ঠে রয়েছে আক্ষেপের সুর। মাঝ-বয়সী হোসেন মিয়া বলেন, “আমরা গরীব মানুষ, কাজ না করলে খাবার জোটে না, ঘনঘন যদি এমন লকডাউন দেয় তবে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।”

এই করোনায় আলীদের মতো এমন হাজারো মানুষ হয়েছেন কর্মহীন। কাজের অভাবে অনেকেই প্রতিনিয়ত হতাশ হচ্ছেন। তাদের সকলের একটাই কথা, কবে আবার স্বাভাবিক হবে এই ধরণী? আবার কবে নেওয়া যাবে মাস্কবিহীন মুক্ত নিঃশ্বাস?

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়