রোববার

২৮ এপ্রিল ২০২৪


১৫ বৈশাখ ১৪৩১,

১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে চার দেশের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ২৩ জুন ২০২১   আপডেট: ০৪:১৪, ২৪ জুন ২০২১
এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে চার দেশের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত

ছবি: এলএনজি বহনকারী জাহাজ (সংগৃহীত)

ঢাকা (২৩ জুন): স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তির (এমএসপিএ) সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বুধবার ১৮ তম অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত ও ২২তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ স্বাক্ষরের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে পেট্রোবাংলা স্পট মার্কেট থেকে এলএমজি আমদানি করবে। এ লক্ষ্যে জাপানের ইটোচু কর্পোরেশন, সিঙ্গাপুরের গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, যুক্তরাজ্যের টোটাল গ্যাস এন্ড পাওয়ার লিমিটেড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মিডল ইস্ট লিমিটেডের সঙ্গে এমএসপিএ করা হবে। এই এমএমপিএ সই করার বিষয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এলএনজি আমদানির জন্য বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমদানি করতে চায়। এ জন্য ২০১৯ সালে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এমএসপিএ পরিকল্পনা নেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে এখন জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং দুবাই- এর চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আদেশ অনুযায়ী চলতি অর্থবছর গ্যাস উৎপাদন ও এলএনজি আমদানিসহ গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭৯ কোটি ঘনমিটার। প্রতি ঘনমিটারে ৫ টাকা ৪৮ পয়সা আয়ের পরও সরকারকে আমদানি ব্যয় মেটাতে ২ টাকা ২১ পয়সা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।


২০১৯-২০ অর্থবছর এলএনজি আমদানিতে আড়াই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছিল। তবে চলতি অর্থবছর ভর্তুকির পরিমাণ ৩১২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। দেশে এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ায় ২০১৮-১৯ অর্থবছর প্রথমবারের মতো এ খাতে ১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় সরকার। কিন্তু ওই অর্থবছর ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল পেট্রোবাংলা।

এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে গত কয়েক বছর বাসাবাড়ির পাশাপাশি শিল্পেও সরকার নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। এলএনজি আমদানি করে শিল্পে নতুন করে সংযোগ দেয়া শুরুর পর গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় কোম্পানিগুলো। এ নিয়ে শুনানিও হয়।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর এ উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আদালত গ্যাস কোম্পানিগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশনা দেয়। তারপর থেকেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়টি ঝুলে আছে।

প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট বিবেচনায় ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। সামিট এলএনজি ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জির স্থাপন করা ভাসমান টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে আমদানীকৃত এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রতিটি এফএসআরইউর সক্ষমতা দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট। তিন-চার বছরের মধ্যে প্রতিদিন ৪০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে প্রতিদিন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়