বৃহস্পতিবার

২৫ এপ্রিল ২০২৪


১২ বৈশাখ ১৪৩১,

১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সুনামগঞ্জে বন্যা: সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৮:১২, ১৮ মে ২০২২   আপডেট: ১৮:১৩, ১৮ মে ২০২২
সুনামগঞ্জে বন্যা: সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জ (১৮ মে): সুনামগঞ্জের ছাতকে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বুধবার পর্যন্ত ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ইতোমধ্যে উপজেলার ১৩ ইউপি ও একটি পৌরসভাসহ নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে এ অঞ্চলের বহু রাস্তাঘাট, প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শতাধিক মৎস্য খামার। খবর ইউএনবি।

ছাতক-সিলেট সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক সড়ক পথে ঝুঁকি নিয়ে কিছু কিছু যান চলাচল করলেও বুধবার সকাল থেকে ছাতকের সঙ্গে জেলা সদরসহ দেশের সব অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে ১৮০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বুধবার দুপুর পর্যন্ত সুরমা চৈলা নদী, পিয়াইন নদী ও সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫৯ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বর্ষণ ও সীমান্ত এলাকা মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধির ফলে পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ সড়ক বন্যা প্লাবিত হওয়ায় ১৮টি সড়ক ও উপজেলা সদরের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছেন।

ছাতক সদর, কালারুকা, চরমহল্লা, জাউয়াবাজার, দোলারবাজার, ভাতগাঁও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এতে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও বসত ঘরের মধ্যে হাঁটুপানি, কোমরপানি থাকায় দুই দিন ধরে হাড়ি বসছে না বানভাসি পরিবারে ঘরে। পাকা,কাঁচা রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়াসহ কলেজ,মাদ্রাসা,মাধ্যমিক ও প্রাথমিক; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে পানি ঢোকায় বন্ধ আছে শিক্ষা কার্যক্রম।

ছাতক-দোয়ারা, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক জাউয়া সড়কের বিভিন্ন অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ সড়ক ইসলামপুর ইউনিয়নের ছনবাড়ি-রতনপুর সড়ক, ছনবাড়ি-গাংপাড়-নোয়াকোট সড়ক, কালারুকা ইউনিয়নরে মুক্তিরগাঁও সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, আমেরতল-ধারণ সড়ক,বুড়াইর গাও-আলমপুর.-দাহারগাও-আলমপুর, তাজপুর-নুরুল্লাহপুর, গোবিন্দনগর-দশঘর, পালপুর-সিংচাপইড় সড়ক, বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কের একাধিক অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

শতাধিক স্টোন ক্রাসার মিল, পোল্ট্রি ফার্ম ও মৎস্য খামারে বন্যার পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শাক-সবজির বাগানেও পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

এদিকে নদীতে কার্গো লোডিং আন লোডিং ও কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

ছাতকে টানা বর্ষণে নদ-নদী, খাল-বিল ও হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ২০০৪ সালে মতো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব হাওড়ের অধিকাংশ পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারায় আহাজারি থামছে না কৃষকদের। রাস্তা, মাঠঘাট ও গোচারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বন্যার্তদের জন্য পৌর শহরের বৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়